শাহরুখ খান থেকে অনন্ত জলিল – পপুলারিটি থেকে পপুলিজমের দূরত্ব

কেউ পপুলার মানেই যে সে পপুলিস্ট, তা না।

অধিকাংশ লোকে কী খাবে না খাবে, সেটা ভেবে জনপ্রিয় বেক্তি যখন তার কর্মকান্ড ও বক্তব্য ঠিক করেন, সেটা পপুলিজম। পপুলার বেক্তি এমন নাও হতে পারেন এবং নিজের পপুলারিটিকে রিস্কে ফেলে দিতে পারেন।

যেমন শাহরুখ খান ইনটলারেন্স ইস্যুতে বিপাকে পড়েছিলেন। পপুলার হয়েও উনি নিজের সামাজিক দায়ের যায়গা থেকে কথা বলেছিলেন। উগ্র হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলি আগেও তাকে সেভাবে পছন্দ করতনা। ২০১৫ সালে সংখ্যালঘুদের প্রতি ধর্মীয় কারণে সহিংসতার বিরুদ্ধে কথা বলায় তার স্টারডম ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছিল।

ধারণা করা যায় ভারতের বহু সাধারণ জনগণ তার ছবি বয়কট করতে শুরু করে ঐ সময় থেকে। দুর্বল ছবিও হিট হত তার এক সময়। ২০১৫’র পর থেকে তার বক্স অফিস গ্রাফের নিম্নগামিতার কারণ শুধুমাত্র সিনেমার মান বা কন্টেন্ট নয়।

আবার কখনও কখনও পপুলিস্ট বেক্তির হিসেবে ভুল হয়ে থাকে।

যেমন অনন্ত জলিলের সাম্প্রতিক কাণ্ড। তার এস্টিমেশন ছিল সম্ভবত, দেশের অধিকাংশ লোক যেহেতু ধর্ষণের কারণ হিসেবে মেয়েদের পোশাককে দোষ দেয় ও ভিক্টিম ব্লেইমিং করে, এই টাইপ বক্তব্য রাখা মাওলানারা খুব ফুটেজ পায়, তিনিও এই ফুটেজ খেতে চেয়েছিলেন।

কিন্তু নেটিজেনরা এভাবে ব্যাকফায়ার করবে উনি বোঝেন নাই। উনি ভালভাবে ধরা খেয়েছেন। নিজের বক্তব্য এডিট করে একই ভিডিও প্রকাশ করার হঠকারী পথ বেছে নিতে বাধ্য হয়েছেন।

সোশাল মিডিয়া এমন যে, ট্রেন্ড ফলো করার চাপে অনেকে যা বিশ্বাস করেন না, তাও সমর্থন করে ফেলেন। তরুণ প্রজন্মের একটা অংশ, এবং বিশেষ করে নারীদের এইক্ষেত্রে অবদান অনেক। তারা বহু মানুষকে সাময়িকভাবেও প্রভাবিত করতে পেরেছেন।

অনন্তের এই ঘটনাটা একটা বিশেষ গুরুত্ব বহন করে থাকবে। পোশাক যে ধর্ষণের কারণ নয়, এই বিষয়টি নতুন করে অনেকেই বুঝে উঠতে পারছেন ও পারবেন আগামীতে।

সঙ্গে পপুলিস্টদের ট্র্যাজেডি হিসেবেও এইটা নোট করে রাখা যেতে পারে। জনগণকে ইউজ করতে গিয়ে তারা নিজেরাই বিগটাইম ইউজ হয়ে যান অনেক সময়।

***

এই ঘটনা আরও সাম্প্রতিক।

সাকিব আল হাসানকে হত্যার করার হুমকি দিয়ে এক বেক্তি ভিডিও আপলোড করেন সোশাল মিডিয়ায়। এতে সাকিব তার বক্তব্য ও অবস্থান পরিবর্তন করেন অথবা করতে বাধ্য হন।

এই ঘটনাটিকে পপুলিস্টদের ট্র্যাজেডি হিসেবে দেখা যাবে কিনা তা নিয়ে আলাপ চলতে পারে। কেননা, প্রাণ নাশের হুমকির মত ঘটনা এখানে আছে।

কিন্তু অবশ্যই এটা পাবলিক ফিগারদের বিষয়ে আমাদের ভাবতে বাধ্য করে।

জনপ্রিয়তা তারা পান, কিন্তু জনগণ তাদের পছন্দের কথা জনপ্রিয় বেক্তিদের চাপ প্রয়োগ করে বলিয়ে নিলে সেই বিষয়টা কেমন?

অর্থাৎ, পপুলার বেক্তির লাইফের নিয়ন্ত্রণ কি চলে যায় পাবলিকের হাতে? তাহলে সমাজের রিফর্মেশন আর ওয়েলফেয়ারে পাবলিক ফিগারদের কাজ কী?


সংযুক্তি

Shah Rukh Khan criticizes ‘intolerance’ in India

সাকিবকে হত্যার হুমকিদাতা গ্রেপ্তার

নারীর পোশাক নিয়ে মন্তব্য করে বিপাকে জলিল

মন্তব্য জানাতে আপনার সোশাল মিডিয়া একাউন্ট অথবা ইমেইল ব্যবহার করুন